আমাদের ভিতর অনেকেই কমবেশি নামাজ পড়ি আবার পড়ি না। কিন্তু আমাদের নামাজ ঠিক হচ্ছে কিনা, রাসুল (স) এর দেখানো অনুযায়ী নামাজ হচ্ছে কিনা সেটা আমরা কখনই যাচাই করিনা। এমনকি নামাজের ভিতর আমরা এমন কিছু কান্ড করে বসি যা নামাজ নষ্ট করার জন্য যথেষ্ট।
নামাজে দাঁড়িয়ে অযথা কাশি দেওয়া, হাত পায়ের আঙ্গুল মটকানো (ফুটানো), অযথা এদিক-সেদিক তাকানো, এমনভাবে শরীরের কোথাও চুলকানো যেটা দেখে মনে হবে সে নামাজে না অন্য কোথায় দাঁড়িয়ে আছে।
তো চলুন দেখা যাক কি কি বিষয় বাদ দিলে বা করলে নামাজ বাতিল হয়ে যায়।
নামাজের বাইরে ৭টি ফরজ রয়েছে।
- শরীর পাক পবিত্র হওয়া।
- কাপড় পাক পবিত্র হওয়া।
- নামাজের স্থান পাক পবিত্র হতে হবে।
- সতর ঢাকা।
- কেবলামুখি হয়ে দাঁড়ানো।
- নামাজের জন্য নিয়ত করা (মুখে নয়, মনে মনে নিয়ত করতে হবে)।
- ওয়াক্তমত নামাজ আদায় করা।
উল্লেখিত ফরজ বিধানের যেকোন একটি স্ব–ইচ্ছায় বাদ দিলে নামাজ হবে না, সেক্ষেত্রে নামাজ আবার পড়তে হবে।
নামাজের ভিতরে ৭টি ফরজ ।
- দাঁড়িয়ে নামাজ পড়া।
- তাকবীরে তাহরীমা বলে নামাজ শুরু করা।
- কিরাত পড়া (সুরা ফাতেহাসহ)
- রুকু করা।
- দুই সেজদা করা।
- দুই সেজদার মাঝে একটু সময় বসা।
- শেষ বৈঠক ও তাশাহুদ পড়া।
উল্লেখিত ফরজ বিধানের যেকোন একটি স্ব–ইচ্ছায় বাদ দিলে নামাজ হবে না, সেক্ষেত্রে নামাজ আবার পড়তে হবে।
নামাজের ওয়াজিবসমুহ
- সকল তাকবীর।
- সুরা মিলানো।
- সামিয়াল্লাহু লিমান হামীদা পড়া।
- রব্বানা ওয়া লাকাল হামদ বলা।
- নামাজের প্রথম বৈঠক।
- প্রথম বৈঠকে তাশাহুদ পড়া।
- শেষ বৈঠকে দরুদ পড়া।
উল্লেখিত বিধানের যেকোন একটি স্ব–ইচ্ছায় বাদ দিলে নামাজ বাতিল হবে, ভুলে করে ফেললে সাহু সেজদা দিতে হবে।
নামাজের সুন্নতসমূহ
- দুই হাত কাধ বা পর্যন্ত উঠানো।
- বাম হাতের উপর ডান হাত রাখা।
- রাফউল ঈয়াদিন করা অর্থাৎ রুকুতে যাওয়া এবং রুকু থেকে মাথা উঠানোর সময় দু হাত কাধ বা কান বরাবর উঠানো।
- সেজদার জায়গায় দৃষ্টি রাখা।
- ছানা পড়া।
- আউযুবিল্লাহ পূর্ণ পড়া।
- বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম পড়া।
- সুরা ফাতেহার শেষে আমীন বলা।
- পিঠকে সমতল ভাবে বিছিয়ে দেওয়া।
- দুই সেজদার মাঝে একটু বসে মাগফিরাত কামনা করা।
- তাশাহুদে চারটি বিষয় হতে আশ্রয় চাওয়া।
উল্লেখিত বিধানের যেকোন একটি বাদ দিলে নামাজ বাতিল হবে না, তবে সাওাব কম হবে।
ইবনে আবী শায়বার বর্ণনায় বলা হয়েছেঃ নবী (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ
مَنْ تَرَكَ الصَّلاَةَ فَقَدْ كَفَرَ
’’যে ব্যক্তি নামায পরিত্যাগ করবে, সে কুফরী করবে।’’
উম্মে আয়মান (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ’’ইচ্ছাকৃতভাবে কখনো নামায ছেড়ে দিবে না। কেননা যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে নামায ছেড়ে দেয়, তার থেকে আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের জিম্মাদারী মুক্ত হয়ে যায়।’’ (আহমাদ ৬/৪২১ ও বায়হাক্বী হাদীছটি বর্ণনা করেছেন)


